প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
আধুনিক যুগে আমাদের কাজের চাপ বাড়ছে, বাড়ছে সম্পর্কে অস্থিরতা। এমন সব নানাবিধ কারণে আমরা প্রায়শই মানসিক চাপ ও দুঃশ্চিন্তার শিকার হচ্ছি, যা আমাদের সুস্থ জীবনযাপনকে বাধাগ্রস্ত করছে।
দীর্ঘমেয়াদী চাপ ও দুঃশ্চিন্তা দূর করতে মনোবিদের সাহায্য প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি জানেন কি, ছোট ছোট কিছু কাজের মাধ্যমে আপনি আপনার দৈনন্দিন চাপ ও দুঃশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন??
চলুন জেনে নেওয়া যাক চাপ ও দুঃশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়।
১। “এই দুঃসময় কেটে যাবে” এই বিশ্বাস রাখুন – সন্তান অসুস্থ? আগামীকাল বসকে ফাইনাল রিপোর্ট জমা দিতে হবে? কিংবা বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া? এসব কারণে আমরা অনেক সময় প্রচন্ড মন খারাপ করি এবং মানসিক চাপ অনুভব করি। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, খুব বিরল কিছু সমস্যা ছাড়া পৃথিবীর সব সমস্যারই সমাধাণ সম্ভব। যে সমস্যাটি নিয়ে আপনি এখন ব্যাতিব্যস্ত, আজ থেকে ১ সপ্তাহ পরই হয়তো সেই সমস্যার কোন মূল্য আপনার কাছে থাকবে না। তাই মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন বিপদে-আপদে।
২। নিজেকে শান্ত করতে শিখুন – যখন আমরা কোন মানসিক চাপের সম্মুখীন হই তখন আমাদের শরীরেও কিছু পরিবর্তন আসে। যেমন আমাদের হার্টবিট বেড়ে যায়, শরীরে এড্রোনালিনের প্রবাহ বেড়ে যায় প্রভৃতি। এমন অবস্থায় নিজেকে শান্ত করার কিছু কৌশল খুব কাজে দেয়। যেমন ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া। ধীরে ধীরে বা গভীরভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিলে স্ট্রেস কমে। এছাড়া নিজেকে উৎসাহিত করতে নিজের সাথে কথা বলতে পারেন। যেমন – আমি পারবো, সব সময় এমন খারাপ দিন থাকবে না, আমার নিজের দুঃশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে প্রভৃতি।
এছাড়া শরীরের হাত-পা টানটান করার মাধ্যমেও স্ট্রেস কিছুটা কমে।
৩। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন – আমাদের খাদ্যাভ্যাসের সাথে আমাদের মানসিক অবস্থার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যাফেইন ও অ্যালকোহলসমৃদ্ধ খাবার মানসিক চাপ ও দুঃশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয়। অর্থ্যাৎ খাদ্য তালিকা থেকে চা, কফি, চকলেট, হার্ড ড্রিংকস যথাসম্ভব বাদ দিতে হবে। তবে যারা এসব খাবারে খুব অভ্যস্ত তারা হঠাৎ করে এসব খাওয়া বন্ধ না করে ধীরে ধীরে খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনুন। নতুবা মাথাব্যথা, অস্থিরতা, বিরক্তির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া খাদ্য তালিকায় সুষম খাবার যাতে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৪। ব্যায়াম করুন – নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস, শারীরিক পরিশ্রম মানুষের মন প্রফুল্ল রাখত সহায়তা করে। আপনি যদি নিয়মিত ৩০ মিনিটের মতোও ব্যায়াম করেন তা আপনার শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখবে। কখনো যদি দুঃশ্চিন্তায় আক্রান্ত হন তাহলে লম্বা একটা দৌড় দিন। দেখবেন, মাথাটা অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গেছে।
৫। পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমান – পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা যায়, মাত্র কয়েক ঘন্টা ঘুম কম হলেই তা ক্লান্তি, দুঃখ, মানসিক চাপ, রাগ প্রভৃতির মতো নেতিবাচক আবেগ বৃদ্ধি করে মানুষের মধ্যে। তাই রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। নয়তো সারা দিন অবসাদগ্রস্ত বোধ করবেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া